ভার্জিনিয়া স্লিম


khali

লিখেছেন- শাখা নির্ভানা

দুর্দান্ত প্রতাপ গ্রীষ্মের খরতাপ অল্প সময়ে কাবু করে ফেললো রিক্সা চালক মৌজ আলীকে। উত্তপ্ত ঘামের স্রোত একসময় তার মাথা থেকে পা পর্যন্ত ধেয়ে যায়। তারপরেও মুখে তার হাসির কমতি নেই। ঘামে জবজব ফতুয়ার পিঠ। একটা গুমোট হল্কা সালফার সহ ঘামের তীব্র দুর্গন্ধ রিক্সা শ্রমিকের পিঠ থেকে বয়ে এনে যাত্রীর নাকে পৌছে দিলো। এক ঝাপটা বাতাস রিক্সাওলাকে দুদন্ড শান্তি দিলেও আরোহীকে দিল জ্বালার উপরে রশুন তেলা। আরোহীর তাই নাকে রুমাল।

কুয়াশার মতন ধুপছায়া অন্ধকারের ধুল-ঘুর্ণী কার যেন অভিশাপ বয়ে বয়ে ক্লান্ত শরীরে রাস্তার যাবতীয় প্রাণীদের জানে জানে গুমোটের কষ্ট পৌছে দিয়ে যায়। রিক্সার ড্রাইভার গজগজ করে- ইহ, সূর্যের চেয়ে বালি গরম।
কারে বললে, কি কথা?- অপরিস্কার ভাষা আরোহীর কানে না পৌছানোর কারণে এই গুমোটের গুমে প্রশ্ন আসে পেছন থেকে।
না কিছু না, তয় কইছিলাম- বারো হাত ফলের তেরো হাত বিঁচি। বারোখান রাস্তার এগারোখানই বন্ধ। পেডের ঠিক বিছখানে লাত্থি হান্দাইছে সরকার ব্যডায়।

হুম…। ডান পায়ের উপরে বাম পাটা তুলে দিয়ে একটু আয়েশ করে বসে আরোহী। বিড়বিড় করে গলায় সুর ধরে- সরকার ব্যডা, সরকার ব্যডা…। গার্ল-ফ্রেণ্ডের গিফট করা ভার্জিনিয়া স্লিমের প্যকেটটা বের করে সেখান থেকে একটায় আগুন লাগিয়ে ঠোটের কোনায় চেপে ধরে রাখে। আধখানা টান দিয়ে বাকীটা ঘামে জুবজুব গাড়োয়ানকে দিয়ে বলে- খাও, ইম্পোর্টেড মাল। আরোহীর চোখের দুইপাশে কুঁচকানো আমোদ। এত বড় মাপের আরোহী কপাল ভালো হলে সপ্তাহে দুই-এক জন সওয়ার হয় এই রিক্সায়।

বাচ্চা পোলার নুনুর মতন চিক্কন আধখানা সিগারেট হাতে নিয়ে আবার গজগজ করে ডাম্প ফিল্ডে বেড়ে উঠা রিক্সাওলা হারামী- নিনুদুন, বিনুদুন, দুনিয়াডা বরই বিনুদুন।
এবারো অপরিস্কার বাক্যগুলো পৌছায় না আরোহীর কানে। তাই আবারও পেছন থেকে প্রশ্ন আসে- কারে, কি বললে? আবার বলো। ব্যটারীওলা মোবাইল পাখা হাতে আরোহীর চোখের দুই কোনে ভাঁজ হয়ে লেগে থাকে বিনোদন। হারামী ল্যণ্ডফিলের ডাম্প বিনোদন।

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s